প্রচ্ছদ ধর্ম রমজানের এই রহমতের দিনে আল্লাহ আমাদের মাফ করে দিন।

রমজানের এই রহমতের দিনে আল্লাহ আমাদের মাফ করে দিন।

0
মো: রেজাউল করিম মৃধা : পবিত্র রমজানুল মোবারককে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। রহমত, বরকত ও নাজাতের।প্রথম ১০ দিন রহমতের ।অফুরন্ত রহমত বর্ষিত হতে থাকে। আমাদের অস্তিত্বজুড়ে আল্লাহর রহমত। রহমত ছাড়া এক মুহূর্তও বাঁচার উপায় নেই। তবে পবিত্র রমজানের প্রথম দশদিনে আরো প্রবল বেগে বইতে থাকে রহমতের বারিধারা। এতে সিক্ত হয়ে মুমিন বান্দারা পরকালে সুউচ্চ আসনে আসীন হতে পারেন।
রাসুল (স:) বলেন, তোমাদের সামনে রমজান মাস হাজির। এটি অত্যন্ত বরকতপূর্ণ মাস। এ মাসের রোজা আল্লাহ তোমাদের ওপর ফরজ করেছেন। এ মাসে রোজা রাখার মাধ্যমে শারীরিক ও আত্মিকভাবে নিজেদের গড়ে তুলতে সক্ষম হই। তাই আল্লাহতায়ালা রোজাদারদের জন্য পবিত্র রমজান মাসে তার রহমতের দরজা অবারিত করে দেন। রমজানে রোজাদার আল্লাহর কাছে যত চাইবে, আল্লাহ ততই দেবেন। রমজানে এর ব্যাপকতা আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে।
রমজানের প্রথম দশক রহমতের দশক হিসেবে বিশেষায়িত। পবিত্র মাহে রমজানের বরকতে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হয়। ফলে আদম সন্তান রোজা পালন, নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত, দান–সদকা, ফিতরা, জাকাত প্রদান ও জিকির–আসকার ইত্যাদিতে মশগুল হয়ে তাকওয়া অর্জনে অধিক সচেষ্ট হতে পারে।
এ মহাবিপদ থেকে নিজেদের রক্ষা করার একটা মহা সুযোগ হতে পারে এ পবিত্র রমজান। রমজানের মাধ্যমে মহান প্রভু আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন তার কাছে ফিরে আসার। ক্ষমা চাওয়ার। নতজানু হয়ে ক্রন্দন করার। সাহাবি আবদুল্লাহ বিন সাখির (রা.) বলেন, প্রিয় নবীজি (স:) প্রভুর কাছে কাঁদতেন নতজানু হয়ে। আমি তাকে কান্না অবস্থায় সালাত আদায় করতে দেখেছি।
আল্লাহ তাআলার বিশেষ গুণ বা বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো রহমত। রহমান অর্থ পরম করুণাময়। যিনি দয়া বা রহমত কারও প্রতি কোনো অবস্থায় এক মুহূর্তের জন্যও বন্ধ করে দেন না, তিনি রহমান। রহিম অর্থ অতীব মেহেরবান, অতিশয় দয়ালু। আল্লাহর এ দয়া শুধু মুমিন মুসলিমদের জন্য খাস বা বিশেষায়িত, যা আখিরাতে বিশেষভাবে প্রকাশিত হবে। যারা দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ ও রাসুল (স:.)–কে মেনে ইসলামের অনুশাসন বা রীতিনীতি অনুসারে জীবন যাপন করেছেন, শুধু তাঁরাই মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে কবর, মিজান, পুলসিরাত ও হাশরে আল্লাহর ‘রহিম’ নামক দয়া বা অনুগ্রহ লাভে ধন্য হবেন।
রমজানের যখন প্রথম দিন শুরু হয় তখন রহমতের দিন আরম্ভ হয়। আর বান্দা যখন সঠিক নিয়তে রোজা রাখে, রমজানের সব হকগুলো আদায় করে, সঠিকভাবে সংযমী হয়, হালাল রুজি দ্বারা সেহেরী খায়, হালাল রুজি দ্বারা ইফতার করে, কাউকে গালি না দেয়, কারো হক নষ্ট না করে, ঘুষ না খায়, এভাবে সারাদিন কাটিয়ে দেয় এবং এভাবে সব রমজানের রোজা রাখার নিয়ত করে- তার জন্য রহমত।
হযরত সাহাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (স:) বলেন, ‘জান্নাতের মধ্যে রাইয়ান নামক এক দরজা আছে, এ দরজা দিয়ে কেবলমাত্র কেয়ামতের দিন রোজাদার লোকেরা প্রবেশ করতে পারবেন। ঘোষণা দেয়া হবে রোজাদার লোকেরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবেন এবং রোজাদাররা রাইয়ান গেইট দিয়ে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। সুবহান আল্লাহ।
তারাবি নামাজ শেষে পড়ি আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা জান্নাতা ওয়া নাউ’জুবিকা মিনান্নারী, ইয়া খালিকাল জান্নাতা ওয়ান্নারী, বিরহতিকা ইয়া আজিজু, ইয়া গাফ্ফারু, ইয়া কারীমু, ইয়া সাত্তারু, ইয়া রাহীমু, ইয়া জাব্বারু, ইয়া খালিকু, ইয়া বার্র। আল্লাহুম্মা আযিরনা মিনান্নার; ইয়া মুযিরু, ইয়া মুযিরু, ইয়া মুযির। বিরহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহিমিন।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর তেত্রিশবার সুবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ, তেত্রিশবার আল্লাহু আকবার পড়ে এবং একশবার পূর্ণ করার জন্য একবার -লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির -পড়ে তার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয় যদিও তা সাগরের ফেনাপুঞ্জের সমান হয়।’ (মুসলিম)।
যে কোন নামাজ শেষ অথবা যে কোন সময় বেশী বেশী পড়ি।”আল্লাহম্মা ইন্নকা আফওয়ান, তুহিব্বুল আফুয়া ফু আন্নি” বলে আল্লাহ কাছে দোওয়া করি।এছাড়া কোরআন তেলোয়াত, দোওয়া দরুদ পড়ি এবং বলি আল্লাহ তুমি আমাদের রোজাকে কবুল করো।এই রহমতের দিনে আমাদের কে করোনাভাইরস মহামারি থেকে রক্ষা করো। সকল বালা মুসিবত থেকে হেফাজত করো। সামনের দিন গুলি ইসলামের বিধি বিধান মত সঠিক ভাবে চলার জন্য তৌফিক দান করো। আমাদের সকলের জীবনের গুনাহ বা পাপ গুলিকে মাফ করে দাও। আমিন।