প্রচ্ছদ ফিচার দেশ ভাগে পোশাক!

দেশ ভাগে পোশাক!

0
জিয়াউর রহমান সাকলাইন: শেখ সাদী খানের গল্পের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে সেই যে পোশাকের মর্যাদা গল্পটি! নিজে না খেয়ে পোশাকের পকেটে পুরেছিলেন। এ সব গল্প থেকে আমরা মজা পাই, বিজ্ঞের মত সমালোচনা করি কিন্তু কখনো কি মানি বাস্তব জীবনে? শর্ট মিনি স্কার্ট পরা যে কোন মেয়েই অসভ্য যতই তার আচরন সভ্য হোক! পক্ষান্তরে অসদাচরণ কোন মেয়ে যদি হিজাব পরে তাহলে সে অত্যন্ত আদবী। আমরা যে আসলে কিভাবে একটা মানুষকে ট্যাগ করি তা আমরা নিজেরাই বুঝিনা।
এক সাহাবীর কথা মনে পড়ছে এ কথা লিখতে গিয়ে। তিনি প্রতিদিন সন্ধ্যায় এক পানশালা থেকে মদ কিনে নিয়ে বাসায় ফিরতেন।লোকজন এই মদ কেনা দেখেই হিসেব করে নেয় তিনি মদাসক্ত। অথচ তিনি বাসায় এনে এগুলো ফেলে দিয়ে বলতেন স্ত্রীকে যে আজ অন্তত কিছু লোককে মদ পান থেকে বিরত রাখতে পেরেছি!সুতরাং খালি চোখে আমরা যা দেখি বা যা বুঝি তার সবটাই যে ঠিক না তা আমরা মানি না।
এবার আসি আমার কথায়।রক্ষনশীল পরিবারে জন্ম বলে নাটক সিনেমা গান বাজনা করা আমার পরিবারের কেউই আজ পর্যন্ত মানতে পারিনি। তাই তারা কখনোই আমার ধুতি পরা ছবি দেখে খুশী হতে যেমন পারেননি তেমনি আমার অনেক আধুনিক মনস্ক সংস্কৃতিবান বন্ধুরা আমার এই সালোয়ার কোর্তা পোশাকে দেখলে আমাকে সহজে নিতে পারেন না।

একপক্ষ হিন্দু হয়ে গেলাম এই ভয়ে দোষারূপ করেন তো আরেকপক্ষ রাজাকার হয়ে গেলাম বলে কটাক্ষ করেন!একবার এক ঈদে পরিকল্পনা করেছিলাম সৌদি আরবীয় জুব্বা পরব যেটা এই বিলেতে খুব বেশি প্রচলিত । কিন্তু আমার কিছু বন্ধুরা বাধ সাধল। এসব পরলে ওদের সাথে মেশা যাবেনা।
কিন্তু অদ্ভূত ব্যাপার ইংরেজদের দেয়া পোশাক আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করি , ওখানে আমরা সবাই এক। দেশি পোশাক কি আমরা বাসায় কেউ পরি? লুঙ্গি কি কেউ ব্যবহার করেন? মাধুরী কাজলের লেহেঙ্গা ছাড়া তো আজকাল বিয়ে বা উৎসব জমেই না। ওটা পরলে তো কোনো আপত্তি হয় না। ধুতি, সালোয়ার কূর্তা অথবা ভারতীয় বিয়ের সাজ এসব দিয়ে কিভাবে দেশপ্রেম বা জাতিভেদ বিচার করবেন? সৌদি পোশাক পরলেই খারাপ আর ইংরেজ পোশাক পরলেই আধুনিক এ ধারনা থেকেও তো বের হওয়া উচিত।মুক্ত অর্থনীতি মুক্ত বাজারের সাথে সাথে মনটাকেও তো মুক্ত রাখা চাই।